ঈদের নামাজ কি ঘরে পড়া যাবে?
ঘরে ঈদ এর নামাজ পড়া যাবে কিনা সে ব্যাপারে হানিফী স্কুল অফ থট এ বলা হয়েছে ঈদের নামাজ হচ্ছে ওয়াজিব। সূরা কাউসারের ২ নং আয়াতে আল্লাহতালা বলেছেন "ফাসাল্লি লিরাব্বিকা ওয়ানহার"
অর্থাৎ আগে সালাত আদায় করুন আপনার রবের জন্য তারপর উট জবাই করুন।
যদিও এই হাদিসটি ঈদ উল
আজহাকে কেন্দ্র করে বলা হয়েছে।তবুও এতে বুঝা যায় ঈদ এর সালাত কতটা গুরুত্বপূর্ণ। সহি
বুখারীতে একটি হাদিসে বর্ণিত আছে উম্মে আতিয়ার (রাঃ) বর্ণনা করেছেন ঈদ উল আজহা এবং
ঈদ উল ফিতর এ আমাদের নারীরা যারা আছে আমরা সবাই যেন ঈদগাহে যাই। এমনকি যাদের পিরিয়ড চলছে তারাও যেন ঈদগাহে
যায়। সেক্ষেত্রে তারা নামাজ পড়তে পারবেনা কিন্তু তারা কল্যাণের সাথে অর্থাৎ আনন্দের
সাথে শরিক হতে পারে সেই জন্য যাবে। এক্ষেত্রে তারা ঈদগাহে ঢুকবেনা।
এখন ঈদ এর নামাজ কোন কারণে
মসজিদে না পড়তে পারলে বা ঘুম থেকে দেরিতে উঠার কারণে মিস করলে একাকী বা জামায়াতে ঘরে
পড়া যাবে কিনা এই ব্যাপারে বেশির ভাগ মুসলিম স্কলারদের ভাষ্য হচ্ছে ঈদ এর নামাজ মিস
করলে তা একাকী বা বাসায় জামাতে পড়া যাবে।এটা হলো প্রথম মত। আর দ্বিতীয় মত হলো ওলামায়ে
আহনাফদের মত। হানাফী মাজহাফদের মত হলো ঈদ এর নামাজ একাকী পড়া
যাবে না। এক্ষেত্রে তাদের যুক্তি হলো ঈদ এর নামাজ হলো সামাজিক ইবাদত। জুমার নামাজের
ক্ষেত্রে যে শর্ত ঈদ এর নামাজ এর ক্ষেত্রেও একই নিয়ম।অর্থৎ সেক্ষেত্রে ঈদ এর নামাজ
আর পড়ার প্রয়োজন নেই। এক্ষেত্রে সে চাইলে চাশতের নামাজ ২ রাকাত কিংবা ৪ রাকাত পড়তে
পারে।এটি হচ্ছে হানফি স্কুল অফ থট এর যুক্তি।
আর মেজোরিটি স্কলার এর যুক্তি হলো কেউ ঈদ এর নামাজ
মিস করলে সে একাকী বা ঘরে জামায়াতে ঈদ এর নামাজ আদায় করতে পারবে। এক্ষেত্রে একটি শক্তিশালী
দলিল আছে সহি বুখারির আলোকে তা হলো : আনাস (রাঃ)উনি শেষ জীবনে ইরানের বসরাতে থাকতেন।
কোন একটি কারণে তিনি ঈদ এর নামাজ মিস করলে তিনি বাসায় এসে তার দাসদাসী এবং পরিবার পরিজন
নিয়ে নামাজ আদায় করেন। আনাস (রাঃ)ছিলেন নবী (সাঃ) এর একজন একনিষ্ঠ খাদেম যিনি ১০ বছর
নবী (সাঃ) এর খেদমত করেছেন। সেই আলোকে বলা
যায় ঈদ এর নামাজ কোনো কারণে মিস করলে তা জামাতে পড়া যায়। ঈদ এর নামাজ এর জন্য কোনো
আজান দিতে হয় না এমনকি একামত ও দিতে হয় না। ঘরে পড়লে এই নামাজের শেষে কোনো খুদবা দেয়া
লাগবেনা। আমরা বাংলাদেশিরা বেশিরভাগ হানাফী মাজহাবের অনুসারী তাই এখানে ঈদ এর নামাজ
২ রাকাত ৬ তাকবীর এর সাথে আদায় করা হয়।তাকবীরে তাহরীমা আল্লাহুআকবার বলে সানা পরে কেরাত
পড়ার আগে অতিরিক্ত ৩ টা তাকবীর দিতে হয় আল্লাহুআকবার আল্লাহুআকবার আল্লাহুআকবার তারপর
সূরা ফাতিহা পড়ে অন্য একটা সূরা পড়বেন তারপর রুকু ও সিজদা করবেন তারপর দ্বিতীয় রাকাতের
জন্য দাঁড়িয়ে কেরাত পড়ে ফেলতে হবে অর্থাৎ সূরা ফাতিহা ও অন্য একটি সূরা পড়ে ফেলতে হবে
তারপর রুকুতে যাওয়ার আগে আবার অতিরিক্ত ৩ টা তাকবীর দিবেন আল্লাহুআকবার আল্লাহুআকবার
আল্লাহুআকবার তারপর চতুর্থ তাবীরের সময় রুকুতে যেতে হবে এবং বাকি সব নামাজের মতো নামাজ
শেষ করতে হবে। এভাবে ঈদ এর নামাজ আমরা বাসায় আদায় করতে পারি।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন